কাইয়ুম চৌধুরী, সীতাকুণ্ডঃ
ব্যাংক থেকে ইন্ডাস্ট্রির জন্য লোন নেয়ার পরই গ্রেফতার হয়ে যান,
২৬০ কোটি টাকার ঋণখেলাপির দায়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আসলাম চৌধুরী ও তার স্ত্রী নাজনীন মাওলা চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালত।গত সোমবার (১৮ আগস্ট) বিচারক মো. হেলাল উদ্দীনের আদালত এ আদেশ দেন। বিষয়টি মঙ্গলবার নিশ্চিত করেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. এরশাদ।
মামলার নথি অনুযায়ী, নগরীর পাহাড়তলী শাখা স্ট্যান্ডার ব্যাংক থেকে লোন নেয়ার পর পরই ইসরায়েলের গোয়েন্দ প্রধানের সাথে বৈঠক ইস্যু তোলে আসলাম চৌধুরী কে গ্রেফতার করেন পুলিশ। এর পরই ব্যাংক ঋণ নিয়মমাফিক পরিশোধ না করায় স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক মামলাটি দায়ের করে। ঋণের বিপরীতে বন্ধক রাখা সম্পদ নিলামে তুললেও কোনো ক্রেতা আগ্রহ না দেখানোয় ব্যাংক আদালতের দ্বারস্থ হয়। ব্যাংকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আসলাম চৌধুরী দম্পতির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
বিএনপির নেতা আসলাম চৌধুরী প্রথম আলোচনায় আসেন ২০১৬ সালে। ওই বছরের ১৫ মে রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে তাকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরদিন ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় আদালতে তোলা হয়। এরপর সরকারের পতনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত বছর ৫ আগস্ট'২৪ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা তৈরি হয়। এর ১৫ দিন পর, ২০ আগস্ট'২৪ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান আসলাম চৌধুরী। এক বছর পার না হতেই আবারও ঋণখেলাপির মামলায় তাঁর নাম উঠে আসে ওয়ারেন্ট ইস্যুতে।
সীতাকুণ্ড উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতৃবৃন্দ জানায়, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহা সচিব আসলাম চৌধুরী এফসিএ উনার বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির জন্য লোন নেন, এর কয়েকদিন পরই স্বৈরাচারী সরকার কর্তৃক গ্রেফতার করলে একটানা ৮ বছরের অধিক জেলে থাকায় তিনি ব্যাংক লোনের কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যার্থ হন। ৫ আগষ্ট '২৪ আওয়ামী সরকার পতনের পর ২০ আগষ্ট,২৪ তিনি জেল থেকে মুক্তি পান। এরপর তিনি ব্যবসা ঘুছাতে ও চালু করতে,ব্যাংক লোন পরিশোধ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এরই মধ্যে আদালত উনার নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু করে লোন পরিশোধে প্রচেষ্টার বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে নেতৃবৃন্দরা মনে করেন।
তিনি অত্যান্ত জনপ্রিয় ব্যক্তি রাজনীতিবিদ। তাঁর জনপ্রিয়তা রুদ্ধ করতে, নির্বাচনে প্রতিদন্ধিতা করতে না পারার জন্য এটি রাজনীতি চক্রান্ত বলে নেতৃবৃন্দরা দাবী করেন।
অভিলম্বে আসলাম চৌধুরীর গ্রেফতারী পরোয়ানা প্রত্যাহার করে তাঁর ব্যবসা চালু করার সুযোগ ও নির্বাচনে অংশ গ্রহনের বাধাগ্রহস্ত না করার দাবী জানান।
এব্যাপারে আসলাম চৌধুরী এফসিএ বলেন, ব্যবসার জন্য লোন নিয়েছি, তবে কিস্তির সময় আসার আগেই স্বৈরাচার সরকার আমাকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করে,এরপর একের পর এক মামলা দিতে থাকেন। মোট ৭৩ টি মামলা দিয়ে আমাকে একটানা ৮ বছরের অধিক হাজতে আটকে রাখে।আমার ব্যবসা,কারখানা,শিপইয়ার্ড সব বন্ধ করে দেয়। ৫ আগষ্ট ২৪ ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার সরকার পালিয়ে গেলে আমি মুক্তি পেলে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখনো চালু করতে পারিনি,ফলে ব্যাংকের লেনদেন আপডেট রাখতে পারিনি,তবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। নতুন করে গ্রেফতারী পরোয়ানা লোন পরিশোধে বাধা সৃষ্টি করবে।তাছাড়া রাজনৈতিক চক্রান্ত ও হতে পারে।