অনলাইন ডেস্কঃ
সোমবার লোকসভায় অধিবেশন শুরুর কিছু ক্ষণের মধ্যেই সচিবালয় থেকে জানানো হয়, স্পিকার ওম বিড়লার নির্দেশে রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করার সিদ্ধান্ত বাতিল করার কথা। দুপুরে বাদল অধিবেশনে যোগ দিতে সংসদ ভবনে হাজির হলেন তিনি। ওয়েনাড়ের সাংসদকে সংবর্ধনা জানাতে তাঁর দল কংগ্রেসের পাশাপাশি ‘তৎপর’ ছিলেন বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র অন্যান্য দলের নেতারাও। সংসদ ভবনের পাশাপাশি কংগ্রেসের সদর দফতর ২৪ আকবর রোডেও দেখা গিয়েছে উন্মাদনা।
সোমবার বিকেলে ‘ইন্ডিয়া’ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বিরোধীদের তরফে অনাস্থা বিতর্কের সূচনা করবেন কেরলের ওয়েনাড়ের সাংসদপদে প্রত্যাবর্তন করা রাহুল। সে ক্ষেত্রে লোকসভা ভোটের আগে ‘মোদী বনাম রাহুল’ লড়াই নতুন মাত্রা পাবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন। আনুষ্ঠানিক ভাবে বিরোধী জোটের ‘প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী’ হিসাবে রাহুলের নাম ঘোষিত হয়নি। কিন্তু শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এবং তার পরে সংসদে রাহুলের প্রত্যাবর্তন জাতীয় স্তরে মোদীর ‘বিকল্প’ হিসাবে রাহুলের নাম আলোচনায় এনে দিল বলে মনে করছেন তাঁরা।
গত ২৩ মার্চ ‘মোদী’ পদবি অবমাননা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে দু’বছর জেলের সাজা পাওয়ায় সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যায় রাহুলের। শুক্রবারই সুপ্রিম কোর্টের তরফে রাহুলের সেই শাস্তির নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। সেই স্থগিতাদেশের ৪৮ ঘণ্টা পরেই রাহুলকে তাঁর সাংসদ পদ ফিরিয়ে দেন লোকসভার স্পিকার। সোমবার দুপুর ১২টার কিছু আগে লোকসভায় আসেন রাহুল।
গত ২৬ জুলাই ‘ইন্ডিয়া’র তরফে মোদীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে নোটিস জমা দিয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ। সেই সঙ্গে তেলঙ্গানার শাসকদল বিআরএসের হয়ে পৃথক ভাবে অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিস জমা দিয়েছিলেন লোকসভার সাংসদ নামা নাগেশ্বর রাও। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা জানান, সেই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে মঙ্গলবার (৮ অগস্ট) আলোচনা শুরু হবে সংসদে। ১০ অগস্ট অনাস্থা প্রস্তাবের জবাবি বক্তৃতা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সংসদীয় বিধি অনুযায়ী লোকসভার স্পিকার অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিস গ্রহণ করার ১০ দিনের মধ্যেই তা নিয়ে সংসদে বিতর্কের সূচনা হওয়ার কথা। এ বিষয়ে দিন নির্ধারণের ক্ষমতা একমাত্র স্পিকারের। সেই বিধি মেনেই ২৬ জুলাই জমা পড়া অনাস্থা নোটিসের ভিত্তিতে মঙ্গলবার লোকসভার স্পিকার ওই সিদ্ধান্ত নেন। ঘটনাচক্রে, সংসদের চলতি বাদল অধিবেশন শেষ হচ্ছে ১০ অগস্ট। বিরোধীরা ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে, বাদল অধিবেশনের শেষ তিনটি দিনই কেন বরাদ্দ হল অনাস্থা নিয়ে বিতর্কের জন্য?
অবশ্য বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনলেও মোদী সরকারের পতনের বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নেই। কারণ, ৫৪৩ সাংসদের লোকসভায় সরকারের পতন ঘটানোর জন্য প্রয়োজন ২৭২ সাংসদের সমর্থন। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সাংসদ সংখ্যা ৩৩২। এই আবহে রাহুলের বক্তৃতা নিয়ে প্রবল কৌতূহল তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।